Wednesday, June 24, 2015

সেকুলারিজম অর্থাৎ ধর্ম নিরপেক্ষতা মতবাদ।

সেকুলারিজম অর্থাৎ ধর্ম নিরপেক্ষতা মতবাদ।

সেকুলারিজম অর্থাৎ ধর্ম নিরপেক্ষতা মতবাদ।
__________বর্তমানে আমরা তরুণ পরেছি এক বিশাল মছিবতে। যেখানে আমাদের অনেকের ইসলাম সম্পর্কে জানার দৌড় শুধু মাত্র দুই এক বছর ধরে মক্তবে বা ২০০ টাকা মাসে দেওয়া কোন এক ছাত্রের নিকটে অথবা ধর্মব্যবসায়ী আলেম মোল্লার নিকট আর এই স্বল্প শিক্ষা নিয়েই আমরা চালিয়ে যাচ্ছি তর্ক-বিতর্ক।
তবে আজ আমি অতি সমালোচিত ও ধ্বংসাত্মক একটি বিষয় নিয়ে আমার অল্প জ্ঞানের ভিত্তিতে কিছু বলতে চাচ্ছি। যা নব্য মুসলিমদেরকে এক বিশাল ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, ঈমানকে হাইজ্যাক কোরে।অত:পর তারা কিছু ভ্রান্ত কথাকে পুজি করে তর্ক করেই যাচ্ছে। আর বিষয়টি হল মানব সৃষ্ট কুফরি ধর্ম 'ধর্মনিরপেক্ষতা'। 
___________এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হল মানুষ। আর মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল মুহাম্মদ (সা:)। মহান আল্লাহ এই মানব জাতিকে হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে অনেক নবী-রাসূল প্রেরণ করেছিলেন এই পৃথিবীতে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূলের মর্যাদা পেয়েছিলেন মুহাম্মদ (সা:)। আর তার উপর অর্পিত সত্য জীবনব্যবস্থা (দ্বীন) হল ইসলাম। আর এই ইসলাম হল সার্বজনীন জীবনব্যবস্থা অর্থাৎ দ্বীন যা মানবতার প্রকৃত সশান্তি অর্থাৎ ধর্ম। যা মানা প্রত্যেক মানুষের উপর ফরজ। আর যারা মানল না তার নিশ্চিত ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে। এই মানবতার ধর্মকে অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই। আর যারা মানবতার জন্য কল্যাণের দ্বীন(জীবনব্যবস্থাকে)
শান্তি (ইসলাম)কে,শান্তির উৎস ধর্মকে অস্বীকার করবে তারাই কাফির।(সুরা মায়েদা ৪৪/৪৫/৪৭)
তাহলে কোথায় যাবে ধর্মনিরপেক্ষতা? 
ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কোন ধর্ম নাই। ইসলামের শেষ সংষ্করণ কোরান আসার পর মানুষের রচিত হুকুমত রহিত হোয়ে গেছে। অন্য সব মানবরচিত দ্বীন অর্থাৎ জীবনব্যবস্থা বর্জনীয়। আমি আল্লাহ আপনাকে এই শান্তির ব্যবস্থা অর্থাৎ সত্যদ্বীন কায়েমের ভার দিলাম।(সুরা তাওবা ৩৩;সফ ৯;ফাতাহ ২৮)
আর ইসলাম(চুড়ান্ত শান্তির ব্যবস্থা)  হলো এমন একটি জীবনব্যবস্থা যা মানবজাতির চুড়ান্ত শান্তির ব্যবস্থা অর্থাৎ এটাই একমাত্র গ্রহণীয়। এবার যার ইচ্ছে সে ইসলামকে মানবে আর না হয় অন্যসব মানবরচিত দ্বীন অর্থাৎ জীবনব্যবস্থা মানবে। তবে ধর্ম নিরপেক্ষতা বলতে কোন কথা পৃথিবীতে পূর্বেও ছিল না। এটা মানুষের সৃষ্টি। আর এখানে মানুষ স্বয়ং আল্লাহর সাথে challange করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে যা সম্পূর্ণ কুফরী!! এই বিষয়ে একটি আয়াত পেশ করছি, 
إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّهِ الإِسْلاَمُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ إِلاَّ مِن بَعْدِ مَا جَاءهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللّهِ فَإِنَّ اللّهِ سَرِيعُ الْحِسَابِ 
"নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন অর্থাৎ জীবনব্যবস্থা একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।" (সূরা আল ইমরান-১৯) 
_________এবার একটু পেছনে ফিরে তাকাই, দেখি ফেরআউন এর সৃষ্ট আইন সম্পর্ক ইসলাম কি বলে? হযরত মুসা(আ:) এর নবুওয়্যাত কালে ফেরাউন ছিলেন বাদশাহ। আর সে তার শক্তির এতই অহংকার করত যে নিজেক প্রভু বলেও দাবি করত। আর মহান আল্লাহ তাকে একটু স্বাধীনতা দিয়ে দেখলেন কি করে। আর ফেরাউন সেই স্বাধীনতার সুযোগে কুফরি সহ নানা প্রকার অন্যায়-অত্যাচার করত। আর তাকে মারার জন্য আল্লাহ মুসা (আ:) এর বাহিনীকেই যথেষ্ট করেছিলেন। ফেরাউন তাদেকে ধাওয়া করতে গিয়েই আল্লাহর গজবে পরে। আর মুসা(আ:) এর বাহিনী আল্লাহর সহায়তায় জয়ী হয়। এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন- 
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ 
"যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।" (সূরা ইব্রাহীম-৭) 
আর এখন দেখবেন মানুষ নিজের হাতে আইন বানিয়ে তৈরি করছে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সাম্রাজ্যবাদ আর সর্বপরি ধর্মনিরপেক্ষবাদ। তাদের অবস্হাও ফেরাউনের ন্যায়। তারা নিজেরাই আল্লাহর বিরুদ্ধে ক্ষমতা প্রণয়ন করছে । আর এই ক্ষমতাকে যে কোন সময় মুচড়ে দিতে পারে আর চুড়ান্ত বিজয় এনে দিবে সত্যিকার মুসলিমের হাতেই। ইসলামী শান্তির ব্যবস্থাই অন্যটায় নয়।
_________যেহেতু প্রত্যেক জিনিস কোন না কোন প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়, তেমনি এই 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শ্লোগানের পেছনেও কিছু কারণ স্পষ্ট। ধর্মনিরপেক্ষতা কথাটা মুসলিমের মধ্যে যেই শুরু করুক না কেন সে ইসলামদ্রোহী। যারা এর পক্ষে প্রচার করছে তারা কখনো মুসলিম হতে পারে না কারণ তারাতো ইসলামকে ত্যাগই করে ফেলছে। আর এর প্রভাব এখন নামধারী মুসলিমদের উপর বেশ পরছে। ১৪০০ বছর আগে যে ইসলাম রসুল(স) নিয়ে এসেছিলেন আজ দুনিয়াময় যে ইসলাম পালিত হচ্ছে তা এক তো নয়ই বরং বিপরীতমুখী বিকৃত একটা ব্যবস্থা অর্থাৎ তাগুতী ব্যবস্থা।
তাইতো তারা মহান স্রষ্টার সত্য সুন্দর ব্যবস্থা ইসলামের মধ্যে ভেজাল ব্যবস্থা নিয়ে আসতে চাচ্ছে,মিশিয়ে জগাখিচুড়ী কোরেছেও। আর এরকম ইসলামের মধ্যে কুফরি মতবাদ ঢুকিয়ে শিরক সহ ব্যভিচারীতার প্রসার ঘটানোর জন্যেই শয়তানের এই এটম বোমা। যা সত্যিকার মুসলিমদের স্পর্শ করার ক্ষমতা না রাখলেও নামধারী মুসলিমদের জ্বালিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। কারণ তার আল্লাহর সাথে শিরক করছে এমতাবস্তায় মহান আল্লাহ বলেন, 
" আমি মানব ও জীন জাতিকে কেবলমাত্র আমার এবাদত অর্থাৎ খেলাফতের জন্য সৃষ্টি করেছি।" --[সূরা যারিয়াত,আয়াতঃ ৫৬] 
আর এইসব নামধারী মুসলিমদের চিনতে আপনাকে বেশিদূর পড়া সম্ভব না হলেও নিচের আয়াতটি জেনে রাখুন- 
"তারা যখন ঈমানদার লোকদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি, (আবার) যখন একাকী তাদের শয়তানের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সাথেই আছি, (ঈমানের কথা বলে ওদের সাথে) আমরা ঠাট্টা করছিলাম মাত্র"। (বাকারাঃ১৪) 
__________আমার স্বল্প জ্ঞানের আলোকে এটাই বোঝাতে চাচ্ছি যার 'ধর্মনিরপেক্ষতার' সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র ইত্যাদির পেছনে ছুটে ইসলামের সাথে প্রতিযোগিতা করছে তারা নিশ্চিত ভুল কাজের মধ্যে আছে (ইসলামের সাথে ভেজাল মিশিয়েছেন)। যা অনতি বিলম্বে ত্যাগ করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া অত্যন্ত জরুরী। আর তাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, 
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوَءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِن قَرِيبٍ فَأُوْلَـئِكَ يَتُوبُ اللّهُ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللّهُ عَلِيماً حَكِيماً 
"অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।"(সূরা আন নিসা-১৭)

No comments:

Post a Comment