Tuesday, April 26, 2016

মানুষ সাধারণত কেনো আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয় ???

 মানুষ সাধারণত কেনো আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয় ???



রাষ্ট্র যদি অথর্ব হয়, অপরাধের বিচার সুনিশ্চিত না করতে পারে তখনই মানুষ সাধারণত আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়। আমরা সেই পরিস্থিতিটাই মোকাবেলা করছি বর্তমানে। এ জন্যই চোর-ডাকাত ধরতে পারলে সুযোগমত মানুষ তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলছে। অধুনা শুরু হয়েছে চাপাতি দিয়ে কোপানো। অপরাধ ধর্মদ্রোহীতা।
রাষ্ট্রের যদি বিচার করার যোগ্যতা থাকত তবে অভিযুক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিশ্চয় মানুষ সরকারের কাছে নালিশ জানাত। কিন্তু মানুষ দেখছে এসবের বিচার সরকার করছে না। অপরদিকে যারা রাষ্ট্রের উপর আস্থা হারিয়ে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে তাদেরকেও রাষ্ট্র চ্যালেঞ্জ করতে পারছে না। রাষ্ট্রের এই হযবরল অবস্থায় জনসাধারণের মনে যে অস্থিতিশীলতা, আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তা নিঃসন্দেহে ধ্বংসের আলামত।
এছাড়াও আছে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, আইনশৃংখলা বাহিনীর ভক্ষকে পরিণত হওয়া, বিরোধী মত দমনে অতি তৎপরতা কিন্তু নিজেদের অপরাধ চেপে যাওয়ার মত নানা সমস্যা।
তাসের ঘরের ভিত্তি কতটুকু ভিত্তিহীন তা নিশ্চয় মানুষ মাত্রই জানার কথা। সামান্য বাতাস এলে সেটা ধ্বসে পড়ে। আমাদের রাষ্ট্রেও মানুষের বিভাজন এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে যে কোন দিক থেকে একটা আঘাত এলে এটা এখন ধ্বসে পড়বে।
আমি জানি না আঘাতটা ঠিক কোন দিক থেকে আসবে। তবে ভিত্তি যে হারে দুর্বল হয়েছে তাতে আঘাতটা যে কোন দিক থেকে যে কোন সময়ই আসতে পারে। একটা জাতিতে এত মত পথ এবং প্রত্যেকের মধ্যেই উগ্রতা সৃষ্টি হলে সেটার প্রতিক্রিয়া একসময় দেখা দেবেই। এ জন্য রাষ্ট্রকে ন্যায় ও আদর্শের উপর না দাঁড়ালে, শাসককে দলীয় চিন্তার ঊর্দ্ধে না উঠা সম্ভব হলে আসন্ন এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। আমি চোখ বুজে আমার প্রিয় জন্মভূমিটিকে সিরিয়া হতে দেখছি। মৃত্যু দেখছি, ধ্বংস দেখছি। ক্ষুধা দেখছি, কান্না দেখছি। কারো কাছে যদি এটা অতিকল্পনা মনে হয় তবে তাদেরকে অনুরোধ করছি- আপনারা বিভাজনগুলো খেয়াল করুন। বেশিদূর যেতে হবে না। চায়ের দোকানগুলোতে বসুন আর শুধুমাত্র বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতার কমেন্টগুলো পড়ুন। আশা করি আমার বক্তব্যের প্রমাণ পেয়ে যাবেন। বিপদ খুব সন্নিকটে। এড়ানোর সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ।

No comments:

Post a Comment