Friday, May 15, 2015

স্বপ্ন বদলে যাওয়ায় সেদিনের সেই কিশোরীটি


স্বপ্ন বদলে যাওয়ায় সেদিনের সেই কিশোরীটি



11083864_432657086883666_2141619887976809738_n
দৃশ্য একঃ (ষোল বছর থেকে)
ষোল বছরের এক বাড়ন্ত কিশোরী। শরীরের সাথে পাল্লা দিয়ে মনের বিশালতাও বাড়ছে ক্রমে ক্রমে। সদ্য ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতিতে কৈশরের স্বপ্ন স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে রোজ রোজ। পরিবার কর্তা কর্ত্রীদের শাসনের বেড়াজালও সম্প্রসারিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত তবুও স্বপ্ন বুনাতে কোন ভাটা পড়েনা। চিরচেনা চারপাশটাকে প্রতিদিনই নতুন মনে হয় নতুন নতুন অনুভূতির আগমনে। টেলিভিশনের বা সিমার পর্দায় নায়ক-নায়িকার আনন্দঘন মুহুর্তে আনমনে নিজেকেই বসিয়ে দেয় নায়িকার পাশে। স্কুলের ক্লাসে পাশের বেঞ্চে বসা সব গুলো ছেলেকে এক এক করে নিজের মনে টেনে এনে পরীক্ষা চালায় কোন ছেলেটি তার জন্য যুৎসই। কখনো আনমনেই লজ্জায় হেসে উঠে বারবার। খাতার পাতায় লুকিয়ে লুকিয়ে লেখা নামের সাথে মাথায় লালন করা নামটা বেশীর ভাগ সময় মিলছেনা বলে দুঃশ্চিন্তার অন্ত নেই। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের শারীরিক পরিবর্তন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরখ করলেও অপরিচিত কারো সামনে নিজের শরীরটাকে সতর্ক ভাবে ঢেকে রাখার প্রচেষ্টা থাকে নিরন্তর। প্রতিবেশী বাল্যবন্ধু ছেলেটার সাথে সময় অসময়ে দেখা করার ব্যপারটা অঘোষিত ভাবে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে, তেমনি ভাবে নিকট বা দূর সম্পর্কিয় আত্মীয়ের সাথে কথা বলার সময় মায়ের সন্দেহের চাহনি খুব সহজেই ধরা পড়ে। বিকেলের আড্ডায় যোগ দিতে ছাদের উপরে কিংবা বাড়ীর আশ-পাশে যেতে অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। মনের ভেতরে লালন করা রঙ্গীন স্বপ্নগুলোকে অনেক সময় শাসনের অদৃশ্য হাত দিয়ে গলা টিপে হত্যা করা হলেও নতুন নতুন অনেক স্বপ্ন ঠিকই জন্ম নেয় ঠিক ঠিক করে বাজতে থাকা সময় ঘড়ির কাঁটার সাথে।
দৃশ্য দুইঃ (চব্বিশ বছর পর)
পরিবার কর্তা পরিবার চালানোর প্রয়োজনীয় রসদ যোগান দিতে বাইরে থাকবেন এটাই স্বভাবিক। তাই এই পরিবারকে আগলে রাখার কঠিন দায়িত্বভার গৃহকর্ত্রীর কাঁধে সওয়ার হয়। তিনি শুধুই একজন গৃহকর্ত্রীই নন তিনি এখন একজন মা, ষোল বছরের এক অবাধ্য কিশোরীর মা। ঘর-দোর সামাল দেবার পাশাপাশি তাকে এখন অনেক সতর্ক হয়ে থাকতে হয়। এই বাড়তি সতর্কতা বাড়ন্তী মেয়েটার জন্য। মেয়েটার ভাব ভঙ্গি বেশ সন্দেহ জনক ঠেকছে। ইদানিং সব সময় কিছু না কিছু লুকিয়ে রাখার প্রবণতা খুব করে পরিলক্ষিত হচ্ছে তাই তাকে এক মূহুর্তের জন্যও চোখের আড়াল করে রাখা যাবেনা কখন কি করে বসে কে জানে।
কেন লেখাঃ প্রথম দৃশ্যে অভিনীত ষোল বছরের কিশোরীটি দ্বিতীয় দৃশ্যে মায়ের ভূমিকায়। সময়ের পালা বদলের সাথে সাথে মেয়েদের দায়িত্বও বদলে যায়। সময় এবং স্বপ্ন বদলে যাওয়ায় সেদিনের সেই কিশোরীটি আজকে গোটা পরিবারের দায়িত্বে নিয়োজিত। আবহমান কাল থেকে আমাদের সমাজের প্রতিটা পরিবারে এই দৃশ্যদ্বয়ের মঞ্চায়ন হয়ে আসছে। কালাতিক্রমে দুই একটা পরিবার এই দৃশ্যনাট্য থেকে সিঁটকে পড়লেও আমাদের সমাজের পরিবার গুলোর বৃহৎ একটা অংশ যে এই নাট্যচক্রের মধ্য দিয়েই যাবে তাতে কোন সন্দে

No comments:

Post a Comment