Thursday, March 3, 2016

শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিবাদ নির্মূল কোনোকালেই সম্ভব হবে না

শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিবাদ নির্মূল কোনোকালেই সম্ভব হবে না


এ অভিশাপ থেকে মানবজাতিকে উদ্ধারের সঠিক পথ
-কাজী মাহফুজ

বিশ্বে চলমান সংকটগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে জঙ্গিবাদ। জঙ্গিবাদীদের হাতে যে পরিমাণ মানুষ নিহত হচ্ছে বা ধ্বংসযজ্ঞ হচ্ছে তার চেয়ে বহু বহুগুণ বেশি মানুষ হতাহত হচ্ছে জঙ্গিবাদীদের দমন করতে গিয়ে। একের পর এক দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির কোনো সীমা-পরিসীমা থাকছে না। কিন্তু এত কিছু করেও দিন দিন জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ কী?
প্রথম কারণ- জঙ্গিবাদ আদর্শিক বিষয়। যারা জঙ্গি হচ্ছে তারা একটি ভ্রান্ত আদর্শকে সঠিক মনে করে সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে তাদের ধর্মীয় আবেগ ও ঈমান জড়িত। তারা যা করছে পার্থিব লাভের আশায় করছে না, পরকালীন প্রতিদানের আশায় করছে। এজন্য শক্তি প্রয়োগ করলে তাদের ঈমান আরো বলিষ্ঠ হচ্ছে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সেই চেতনা প্রবাহিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় কারণ- জঙ্গিবাদের স্রষ্টা প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমা পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যারা জঙ্গিবাদের ইস্যুকে জিইয়ে রেখে বিশ্বময় নিজেদের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্য মানবতার যতই বিপর্যয় ঘটুক না কেন, সেটা এই দানবিক পরাশক্তিগুলোর জন্য কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়, তাদের চাই তেল, গ্যাস, আধিপত্য। সুতরাং তাদের অনুসরণ করে যদি বল প্রয়োগে জঙ্গিবাদ দমনের বা নির্মূলের চেষ্টা চালানো হয়, সেটার ফল হবে উল্টো, জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাবে। পরিণামে আমরাও পরাশক্তিদের তোপের মুখে পড়ে যাবো। সুতরাং এখন আমাদের নিজেদের স্বার্থে জঙ্গিবাদকে কার্যকর পদ্ধতির দ্বারা মোকাবেলা করতে হবে। সেটা হলো- সত্য আদর্শ দিয়ে মিথ্যা আদর্শ জঙ্গিবাদকে মোকাবেলা করতে হবে। যারা জঙ্গিবাদের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালায়, তারা কোর’আন হাদিস, ইতিহাস ইত্যাদি থেকে নানা যুক্তি, তত্ত্ব ও তথ্য তুলে ধরে মানুষকে জঙ্গি হতে প্ররোচিত করে। তাদের সেই যুক্তিগুলোকে যদি ভ্রান্ত হিসাবে প্রতীয়মাণ করা যায় তাহলে অবশ্যই কেউ আর জঙ্গিবাদের দিকে যাবে না এবং ইতোমধ্যেই যারা সেই ভুল পথে পা বাড়িয়েছে তারাও যদি বুঝতে পারে যে এ পথ তাদের দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই ধ্বংস করছে তাহলে তারাও সংশোধিত হবে। জঙ্গিবাদের ভ্রান্ততা প্রমাণ করার জন্য কোর’আন হাদীসভিত্তিক যে যুক্তি তথ্য উপাত্ত দরকার তা আল্লাহর রহমে আমাদের কাছে আছে। এখন জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য দরকার এর ব্যাপক প্রচার। শক্তি প্রয়োগেরও দরকার আছে তবে সেটা একমাত্র পন্থা নয়।

No comments:

Post a Comment