Thursday, June 30, 2016

সব বাদ-মতবাদ ভুলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হোতে হবে

সব বাদ-মতবাদ ভুলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হোতে হবে

-হেযবুত তওহীদ:

বর্তমানে কিছু স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক মহল সাধারণ জনগণের সাথে প্রতারণা কোরছে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে নানা ভাগে বিভক্ত করে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে বোলছে, ওদের চেয়ে আমরা ভালো। যারা নানা অজুহাতে নিরীহ জনসাধারণকে একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলে, বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে টান টান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাদের সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম কোরেছি ঐক্যবদ্ধ হোয়ে, এক জাতি, এক মত হোয়ে। তখন কিন্তু আমাদের মধ্যে এত দল-মতের প্রভাব ছিলো না। নিজেদের মধ্যে দল-মতের প্রভাব থাকলে আমরা কিন্তু স্বাধীন জাতি হোতে পারতাম না। কিন্তু অতি দুর্ভাগ্যের বিষয় হোল এক সময় আমাদেরকে নানা দলে, নানা তাবুতে বিভক্ত কোরতেই এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা চালু করা হয়। তারপর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখা ও ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য লড়াই কোরেছে, এতে বলি হোয়েছে সাধারণ জনগণের জীবন ও সম্পদ। ফলে কেউ নিহত হোয়েছে, আবার কেউ আহত হোয়ে সারাজীবন পঙ্গুত্ব বরণ কোরেছে, অনেকেই হারিয়েছে তাদের সম্পদ। কিন্তু নেতা বা নেত্রীদের কী হোয়েছে? নেতৃবৃন্দের সর্বোচ্চ শাস্তি বলতে গেলে জরিমানা, কাউকে বা জেলের ভিতর ভিআইপি মর্যাদায় কিছু সময় কাটাতে হোয়েছে। কিন্তু রাস্তায় যারা আন্দোলন সংগ্রাম কোরেছে তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ অর্থাৎ মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছে। তাহোলে এই নেতাদের আসল উদ্দেশ্য কী? শুধু ক্ষমতার মসনদে বসা আর রাতারাতি অর্থ বিত্তের মালিক হওয়া, জাতিকে নিয়ে ভাববার সময় তাদের কোথায়? প্রশ্ন এসে দাঁড়ায় এই সুবিধাভোগী জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার কতভাগ? মূলত সুবিধা ভোগ করে মোট জনসংখ্যার শতকরা তিন ভাগের মতো, যে দল যখন ক্ষমতাসীন হন সেদল বা দলের নেতৃস্থানীয়রাই অকল্পনীয় সুবিধা ভোগ করেন। পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসতে না পারলেও গচ্ছিত অর্থ দিয়ে বাকি সময়টা আরাম আয়েশে পার করে দিতে পারেন। সাধারণ রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। বিভিন্ন সভা-সমাবেশের নামে বিদেশ ঘুরে আসেন। এই অর্থ কোথা হতে আসে? তাদের অর্থের যোগান দেন সাধারণ জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ যা ট্যাক্সের মাধ্যমে আদায় করা হয়। রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ করার জায়গা হিসাবে তারা বেছে নেন বিদেশ ভ্রমণ! উন্নয়নের নামে হাজার হাজার প্রকল্প কাগজে কলমে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। যেখানে প্রতিটা শিশু জন্ম নেয় সীমাহীন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে, যে দেশের মানুষ দু’বেলা খেয়ে পরে কোন মতে বেঁচে আছে সে দেশের নেতা-নেত্রীরা কি করে বিলাস ব্যসনে মত্ত থাকেন অথচ জনগণের কল্যাণের কথা বলেই সভা-সমাবেশ করেন, জনতার নামেই সব চালান। কিন্তু যেই জনতার নামে চোলছে সব সেই জনতার খবর তারা রাখেন না। ১৬ কোটি জনতার মধ্যে তখন শুধুমাত্র দলীয় লোকেরাই হন প্রকৃত জনগণ। কি অদ্ভুত রাজনীতি! পাঁচ বছর পর পর আসে ভোট, যতো প্রকার ছলচাতুরী করা যায় ততোই ভালো, ভোটের বাক্স ভরে দিবে জনতা, কোন মতে পাস কোরলে পরবর্তী ৫ বছরে সাধারণ জনতা তাদের চৌকাট পার হবার ক্ষমতা থাকে না, নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে নেতার নিকট পৌঁছা বড়ই দুরূহ হোয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ জনতার ক্ষমতা ঐ ভোটের দিন আর বাকি ৫ বছর ঐ একজনের, কি অদ্ভুত রাজনীতি! ভোটের আগে শত সহস্র প্রতিশ্র“তি থাকে সমাজ ও দেশের মানুষের কাছে, ভোট শেষ হলে প্রতিশ্র“তির কথা বেমালুম ভুলে যান নেতা-নেত্রীরা- এভাবেই চলছে যুুগের পর যুগ। আম জনতা বুঝেও কিছুই কোরতে পারছে না। কারণ সিস্টেমটাই এমন। আপনাকে যদি বলা হয়, আপনি বাঁচবেন, না মরবেন? তবে নিশ্চয় আপনি উত্তর দিবেন, “আমি বাঁচব” কিন্তু আপনাকে যখন প্রশ্ন করা হোচ্ছে- আপনি কি গলায় ফাঁস দিয়ে মরবেন? গুলি খেয়ে মরবেন? আগুনে ঝলসে মরবেন? নাকি পানিতে ডুবে মরবেন? তখন মৃত্যুর সহজ পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আপনার আর উপায় থাকে না। গণতন্ত্র নামক এমনই এক সিস্টেমের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত আমরা যে, পাঁচ বছর পর পর আমাদের শুধু বেছে নিতে বলা হয় মৃত্যুর পন্থা। এভাবেই বহুদিন ধরে আমরা জাতিগতভাবে ধুকে ধুকে মরছি। কিন্তু আর না, সাধারণ জনগণের ভাববার সময় এসেছে, সিদ্ধান্ত নেবার সময় এসেছে। গণতন্ত্র নামক প্রচলিত এই ব্যর্থ, অকার্যকর, ভোগবাদী, নীতি-নৈতিকতাহীন সিস্টেম বা ব্যবস্থাকে বাদ দিয়ে ১৬ কোটি মানুষকে একটি জাতিতে পরিণত হোতে হবে। সকল বাদ-মতবাদ ভুলে, মত-পথ ভুলে, দল-গোষ্ঠী ভুলে, ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ জাতি গড়ার ডাক দিচ্ছে যামানার এমামের অনুসারী তথা হেযবুত তওহীদ।

No comments:

Post a Comment