Monday, April 18, 2016

সত্যের আঘাতই চরম আঘাত


সত্যের আঘাতই চরম আঘাত


রুফায়দাহ পন্নী
হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে অনেকের মাঝে যে বিরূপ মনোভাব রয়েছে তার একমাত্র কারণ হেযবুত তওহীদের বক্তব্য তারা ভালো করে শোনেন নি, কিন্তু বিরুদ্ধ বক্তব্য অনেক শুনেছেন। আমার বিশ্বাস, যে কোনো বিবেকবান ‘শিক্ষিত মনের’ অধিকারী মানুষ যদি মনোযোগ দিয়ে হেযবুত তওহীদের বক্তব্য শোনেন, হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে জানেন তাহলে তার মনে এই আন্দোলনের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হবে।
আমাদের সমাজের সচেতন মানুষ বলতে যাদেরকে বোঝানো হয়, তারা হেযবুত তওহীদের বক্তব্য ভালো করে জানেন না, জানার জন্য আমাদের প্রকাশনা, দৈনিক পত্রিকা, ওয়েবসাইটে থাকা বিপুল তথ্য ও ভিডিও বক্তব্য ইত্যাদি দেখার জন্য যে সময় ও মেধা নিয়োগ করা প্রয়োজন সেটুকু তারা এ কাজে ব্যয় করতে আগ্রহী নন। তারা সকল ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে গড়পড়তা একটা ধারণা করেন এবং সেটাকেই সঠিক মনে করে হেযবুত তওহীদকেও সেই পাল্লায় মাপেন।
পাশাপাশি তাদের কানে বিভিন্ন মহল থেকে হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে অনেক বিরূপ মন্তব্য আসে। যুগের ধর্ম হচ্ছে মানুষ নিন্দাবাদ করতেই সমাজে বেশি অভ্যস্ত আর খারাপ ধারণাগুলোই দ্রুত বিস্তার লাভ করে। আবার নামের মধ্যে ‘হিজবুত’ শব্দটি আছে- এমন নামের অনেক দলই সন্ত্রাসী বে-আইনী কাজ করে। সুতরাং যত দলের নামের মধ্যে এই শব্দটি থাকবে সবাই খারাপ হবে এমন বদ্ধমূল ধারণা নিয়ে বসে থাকাও নিশ্চয় ঠিক হবেনা।
আমি অবাক হই এই সচেতন মানুষ যারা সব বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখেন, কিন্তু যে আন্দোলনটি গত ২১ বছর ধরে একটি অনন্য আদর্শ প্রচার করে যাচ্ছে, যাদের নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনাও চলছে, ফতোয়াবাজরা যাদেরকে খ্রিস্টান, কাফের ফতোয়া দিয়ে বার বার হত্যা করছে, পুড়িয়ে দিচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি, পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাচ্ছে। সেই হেযবুত তওহীদ কী কথাটা বলতে চায় সেটা একটা ঘণ্টা সময় নিয়ে পড়ার বা জানার প্রয়োজন বোধ করছেন না? এ কেমন সচেতনতা?
একটি আন্দোলন সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে তাদের আদর্শ জানতে হবে তাদের প্রকাশনা ও বক্তব্য থেকে, অন্যের মুখ থেকে নয়- এটা কমন সেন্স। অন্যের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে সেটা সম্পর্কে আন্দোলনের ব্যাখ্যাটাও শুনতে হবে। উভয়পক্ষের বক্তব্য না শুনে একটি সিদ্ধান্ত নেয় অসচেতন মানুষ। আমি সেই সব সাংবাদিকদের প্রতি ধন্যবাদ জানাই যারা উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে যে সীমাহীন অপপ্রচার করেছে তার বিপরীতে আমাদের কথাটা কী সেটা তারা জাতির সামনে তুলে ধরছেন।
জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা বা ফতোয়া কারা ছড়াচ্ছে? সেই ধর্মের ধ্বজাধারী শ্রেণিটি যারা যুগে যুগে সকল সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, সকল নবী রসুলদের পর্যন্ত হত্যা করতে চেয়েছে, হত্যা করেছে। সকল দার্শনিক যাদের বক্তব্য কায়েমি স্বার্থের বিরুদ্ধে আঘাত করেছে তাদেরকে কারা পুড়িয়ে মেরেছে? গ্যালিলিও, কোপার্নিকাস, সক্রেটিসের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উন্মাদনাকে কারা ব্যবহার করেছে, কারা মধ্যযুগে ইনকুইজিশান করেছে, জোয়ান অব আর্ককে ডাইনি ফতোয়া দিয়ে পুড়িয়েছে কারা?
সুতরাং বিরূপ ধারণা থাকাটাই চূড়ান্ত নয়, কারা সেটা সেটা ছড়ালো, কেন ছড়ালো সেটাও মুক্তমনের মানুষ বিবেচনা করেন। তারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করবেন যে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে সেই পুরাতন সাপ। এই ভয়ঙ্করতম সাপের ছোবলে অতীতে যারাই বিষাক্রান্ত হয়েছেন, সেই মহামানবদের আজ সবাই শ্রদ্ধা করে, তাদের ব্যাপারে তদানীন্তনকালের সব বিরূপ ধারণার কবর হয়েছে, সত্যের জয় হয়েছে; তাদের বিরোধীরা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। আমাদের সম্পর্কে অনেক বিরূপ ধারণা মানুষের মনে ছিল, যা অনেকাংশেই অপসৃত হয়েছে। এখনো অনেকের মনে বিরূপ ধারণা রয়েছে যেটা অজ্ঞতাপ্রসূত। অচিরেই তার কবর হবে যখন মানুষ আমাদের মুখ থেকে আমাদের কথা জানতে পারবে। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সত্যের জয় অনিবার্য। লেখিকা: উপদেষ্টা, দৈনিক বজ্রশক্তি।

No comments:

Post a Comment