Monday, May 25, 2015

ওয়াজ শিল্পীদের দোয়া

ওয়াজ শিল্পীদের দোয়া

এম আমিনুল এসলাম:
দোয়া একটি আত্মিক বিষয় যার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত স্থান, কাল, পরিবেশ, অবস্থা, প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি। আবার যুগে যুগে সবাই শুধু দোয়ার সুফল কামনা কোরতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে, কিন্তু দোয়ার যে কুফলও আছে তা অনেকেরই জানা নেই। তবে দোয়ার মূল কথাটাই হলো অন্তরের চাওয়ার বাস্তবতা। শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে আল্লাহর হুকুম অমান্য করার পর যখন আদম (আ:) ও হাওয়া অনুতপ্ত হলেন তখন তারা দোয়া কোরলেন, “হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় কোরিয়াছি, যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর এবং দয়া না কর তবে তো আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হইব (আরাফ- ২৩)।” সম্ভবত এখান থেকেই দোয়ার উৎপত্তি।
পবিত্র কোর’আনে দোয়ার কথামালা: পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ মাত্র দু’টি আয়াতে (বাকারা-২৮৬, মুমিন-৩০) তাঁর বান্দাদেরকে দোয়া করার আহবান জানিয়েছেন এবং বাকী প্রায় ৮১ স্থানে দোয়ায় কি বলতে হবে, কিভাবে বলতে হবে, কোন পরিস্থিতে দোয়া কোরতে হবে ইত্যাদি শিখিয়েছেন। আল্লাহর নিজের ছাড়াও আদম (আ:) থেকে শুরু কোরে যুগে যুগে বিভিন্ন নবী এবং আল্লাহর অনুগত বান্দা যাদেরকে আল্লাহ ভালোবাসতেন, তাদের যে সমস্ত দোয়া আল্লাহ কবুল কোরেছেন এবং সেই দোয়ার কথাগুলো আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় হয়েছে তা আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল কোর’আনে স্থান দিয়েছেন এবং আমাদের জন্য শিক্ষনীয় বিষয় কোরেছেন। আমরা বুঝে না বুঝে অনেক সময় অনেক গুরুতর অপরাধ কোরে ফেলি, এ সমস্ত অপরাধ যাতে মাফ হয়ে যায় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য শাস্তি না আসে, আমরা যেন ক্ষমা চেয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ কোরতে পারি সে জন্য আল্লাহ আমাদেরকে দোয়াগুলি শিক্ষা দিয়েছেন।
দোয়া কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত সর্বাত্মক প্রচেষ্টা: আল্লাহর রসুল তাঁর উম্মাহকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, যদি একটি জুতার ফিতার সমতুল্য কোন কিছুর প্রয়োজন হয় তবুও আল্লাহর নিকট সেটার জন্য দোয়া কোরতে। আমাদের দেশে প্রচলিত একটি প্রবাদ বাক্য আছে যে, তদবিরে তকদির ফিরে। তদবির মানেই কোন কাজ হাসিল করার জন্য চেষ্টা করা। আগে চেষ্টার চূড়ান্ত কোরতে হবে, তারপরে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা কোরতে হবে যেন আল্লাহ সেই কাজটি বান্দার জন্য সহজ কোরে দেন বা তাকে সাহায্য করেন। এছাড়া হাদিসের বর্ণনায় এসেছে যে, সন্তানের জন্য মাতা পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া, মুসাফিরের দোয়া, মোজাহেদের দোয়া ইত্যাদি আল্লাহ কবুল কোরে থাকেন।
বর্তমানের বিকৃত আকীদার শক্তিহীন, অক্ষম, ব্যর্থ মোসলেম জাতির কাছে নিজেদেরকে অন্য জাতির গোলামি থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য একমাত্র কাজ ও হাতিয়ার হচ্ছে বসে বসে আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া। এর ধর্মীয় নেতারা, আলেম, মাশায়েখরা এই দোয়া চাওয়াকে বর্তমানে একটি আর্টে শিল্পে পরিণত কোরে ফেলেছেন। লম্বা সময় ধরে এরা লম্বা ফর্দ আকারে আল্লাহর কাছে দোয়া কোরতে থাকেন যেন এদের দোয়া মোতাবেক কাজ করার জন্য আল্লাহ অপেক্ষা কোরে বসে আছেন। মাঝে মাঝে আবার বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতেরও ডাক দেওয়া হয় এবং তাতে এত লম্বা সময় ধরে ফর্দ আকারে মোনাজাত করা হয় যে, হাত তুলে রাখতে রাখতে মানুষের হাত ব্যথা হয়ে যাওয়া ছাড়া ধৈর্যচ্যুতিও ঘটে। অজ্ঞানতা ও বিকৃত আকীদার কারণে এরা ভুলে গেছেন যে, কোন জিনিসের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা না কোরে শুধু আল্লাহর কাছে চাইলেই তিনি তা দেন না, এরকম দোয়া তাঁর কাছে পৌঁছে না। আল্লাহ তাঁর হাবিব, শ্রেষ্ঠ নবীকে যে কাজের ভার দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন সে কাজ সম্পন্ন কোরতে তাঁকে কি অপরিসীম পরিশ্রম কোরতে হয়েছে, কত অপমান-বিদ্রুপ-নির্যাতন-পীড়ন সহ্য কোরতে হয়েছে, যুদ্ধ কোরতে হয়েছে, এমনকি আহতও হতে হয়েছে। তিনি ওসব না কোরে আমাদের ধর্মীয় নেতাদের মত বসে বসে আল্লাহর কাছে দোয়া কোরলেই তো পারতেন। আল্লাহর কাছে বিশ্বনবীর (দ:) দোয়া বড়, না আমাদের আলেম পীর মাশায়েখদের দোয়াই বড়? দোয়াতেই যদি কাজ হতো তবে আল্লাহর কাছে যার দোয়ার চেয়ে গ্রহণযোগ্য আর কারো দোয়া নেই- সেই রসুল (দ:) সারাজীবন ধরে ঐ অক্লান্ত প্রচেষ্টা (জেহাদ) না কোরে শুধু দোয়াই কোরে গেলেন না কেন? তিনি তা করেন নি, কারণ তিনি জানতেন যে, প্রচেষ্টা (আমল) ছাড়া দোয়ার কোন দাম আল্লাহর কাছে নেই। সেই সর্বশ্রেষ্ঠ নবী (দ:) দোয়া যে করেন নি তা নয়; তিনি দোয়া কোরেছেন, কিন্তু যথা সময়ে কোরেছেন অর্থাৎ চূড়ান্ত প্রচেষ্টার পর, সর্বরকম কোরবানির পর, জান বাজি রাখার পর যখন আমলের আর কিছু বাকি নেই তখন। বদরের যুদ্ধ শুরু হবার ঠিক আগের মুহূর্তে যখন মোজাহেদ আসহাবরা তাদের প্রাণ আল্লাহর ও রসুলের জন্য কোরবানি কোরতে তৈরী হয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছেন, এখনই যুদ্ধ আরম্ভ হবে, শুধু সেই সময় আল্লাহর হাবিব আল্লাহর কাছে দোয়া কোরলেন তাঁর প্রভুর সাহায্য চেয়ে। ঐ দোয়ার পেছনে কি ছিলো? ঐ দোয়ার পেছনে ছিলো আল্লাহর নবীর (দ:) চৌদ্দ বছরের অক্লান্ত সাধনা, সীমাহীন কোরবানী, মাতৃভূমি ত্যাগ কোরে দেশত্যাগী হয়ে যাওয়া, পবিত্র দেহের রক্তপাত ও আরও বহু কিছু। এবং এগুলো শুধু তাঁর একার নয়। ঐ যে তিনশ’ তেরজন ওখানে তাদের প্রাণ উৎসর্গ করার জন্য নামাযের মত সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো ছিলেন তাদেরও প্রত্যেকের পেছনে ছিলো তাদের আদর্শকে, দ্বীনকে প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টা, দ্বিধাহীন কোরবানী, নির্মম নির্য্যাতন সহ্য করা। প্রচেষ্টার শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে শেষ সম্বল প্রাণটুকু দেবার জন্য তৈরী হয়ে দাঁড়িয়ে মহানবী (দ:) ঐ দোয়া কোরেছিলেন। ঐ রকম দোয়া আল্লাহ শোনেন, কবুল করেন, যেমন কোরেছিলেন বদরে। কিন্তু প্রচেষ্টা নেই, বিন্দুমাত্র সংগ্রাম নেই, ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাত তুলে দোয়া, এমন দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না। আমাদের ধর্মীয় নেতারা পোলাও কোর্মা খেয়ে যে দোয়া করেন, সে দোয়া আর বদরের আগে রসুলাল্লাহর দোয়ার মধ্যে আসমান যমীনের তফাৎ।
দোয়া কার জন্য: আল্লাহর কোর’আনে যত আদেশ নিষেধ রয়েছে, যত পুরস্কারের কথা রয়েছে, যত কল্যণের কথা রয়েছে প্রত্যেকটি মো’মেনদের জন্য। দোয়া যেহেতু কল্যাণ লাভ করার একটি উপায় সেহেতু এটাও শুধু মো’মেনদের জন্য। মো’মেন ছাড়া মৃতদের কবরে দাড়িয়ে তাদের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করার অনুমতি নেই। স্বয়ং রসুল নিজেও তাঁর মায়ের কবরের সামনে গিয়ে মায়ের জন্য দোয়া করার অনুমতি আল্লাহর কাছে পান নি।
বর্তমানের দোয়া একটা শিল্প: দোয়া করার মূল নীতিকে বিকৃত কোরে ধর্মব্যবসায়ীরা দোয়াকে শিল্পের রূপ দান কোরেছেন। বাংলার পাশাপাশি কোর’আনের আয়াত, উর্দু, ফার্সি ভাষায়ও কিছু কিছু বুলি উচ্চারণ করেন। আবার কোন দোয়ার পরে কোন দোয়া কোরবেন তাও কবিতা আকারে ঠিক কোরে রেখেছেন যা ধর্মপ্রাণ মোসলেমদের কাছে অত্যন্ত শ্রুতিমধুর এবং চিত্তাকর্ষক। তা ছাড়া দোয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজনকারী ব্যক্তি, পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের জন্য করা হয়ে থাকে বিশেষ আকারের দোয়া। দোয়া করার ক্ষেত্রে দোয়াশিল্পী তার ক্লায়েন্টের অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে লক্ষ্য কোরতে কখনো ভুল করেন না। একটা কথা প্রচলিত আছে যে, “যত লম্বা দোয়া তত বেশি টাকা”।
দোয়ার ফল কেন উল্টো হয়: প্রায়ই শোনা যায় আমাদের সমাজের দোয়ার শিল্পিরা বিরাট বিরাট ওয়াজ মাহফিলে, খানকাহ, হুজরা, দরবার শরীফের ওরশ মোবারকে, ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিলে, লক্ষ লক্ষ লোকের এজতেমায়, ঈদের জমায়েত ইত্যাদি উপলক্ষ্যে বিশাল গণজামায়েতে লিস্ট মোতাবেক কতগুলো দোয়া করেন। যেমন হে আল্লাহ! ইসরাইল রাষ্ট্রকে ধ্বংস কোরে দাও, বাইতুল মোকাদ্দাসকে মোসলেমদের হাতে ফিরিয়ে দাও, দুনিয়ার মুসলিমের মাঝে ঐক্য সৃষ্টি কোরে দাও, আমাদের সমাজের সবাইকে খাঁটি ঈমানদার, নামাযি মোত্তাকী বানিয়ে দাও ইত্যাদি ছাড়াও দেশ ও জাতির বর্তমান অবস্থাভেদে কতগুলি নতুন নতুন দোয়ার শব্দ যোগ করেন। কিন্তু তারা বুঝেন না যে, তাদের এই দোয়ার ফল উল্টা হোচ্ছে। যারা দোয়া করেন তারা দোয়া শেষে পোলাও কোর্মা খেতে যান, আর যারা আমীন আমীন বলেন তারা যার যার ব্যবসা, কাজ, কর্ম ইত্যাদিতে ফিরে যান, কারোরই আর মসজিদে আকসার কথা মনে থাকে না। এমন দোয়ায় হাত ব্যাথা করা ছাড়াও বড় বিপদ আছে, কারণ এমন দোয়ায় আল্লাহর সাথে বিদ্রুপ করা হয়। তার চেয়ে দোয়া না করা নিরাপদ। যেমন আমাদের দোয়া শিল্পীরা, আর্টিষ্টরা লক্ষ লক্ষ লোকের এজতেমা, মাহফিলে দোয়া করেন- হে আল্লাহ! তুমি বায়তুল মোকাদ্দাস ইহুদীদের হাত থেকে উদ্ধার কোরে দাও এবং এ দোয়া কোরে যাচ্ছেন ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্ম থেকে, চল্লিশ বছরের বেশী সময় ধরে। ঐ সময়ে যখন দোয়া করা শুরু কোরেছিলেন তখন দোয়াকারীরা আজকের চেয়ে সংখ্যায় অনেক কম ছিলেন এবং ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তনও এখনকার চেয়ে অনেক ছোট ছিলো। যেরুযালেম ও সমজিদে আকসা তখন ইসরাইল রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলো না। এই মহা মোসলেমদের প্রচেষ্টাহীন, আমলহীন দোয়া যতই বেশী লোকের সমাবেশে এবং যতই বেশী লম্বা সময় ধরে হতে লাগলো ইহুদিদের হাতে আরবরা ততই বেশী মার খেতে লাগলো আর ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তনও ততই বড়তে লাগলো। ক্রমেই আজ ইসরাইল রাষ্ট্রের আয়তন প্রথম অবস্থার চেয়ে তিন গুণ বড় এবং পূর্ণ যেরুযালেম শহর বায়তুল মোকাদ্দাসসহ মসজিদে আকসা তাদের দখলে চলে গেছে এবং মোসলেম জাতির ঐক্যের আরও অবনতি হয়েছে এছাড়াও বর্তমান খ্রিস্টান, ইহুদি, বৌদ্ধ এবং হিন্দুদের হাতে আরও অপমানজনক মার খাচ্ছে। অর্থাৎ এক কথায় এরা এই বিরাট বিরাট মাহফিলে, এজতেমায়, মসজিদে, সম্মেলনে যা যা দোয়া কোরছেন, আল্লাহ তার ঠিক উল্টোটা কোরছেন। যত বেশী দোয়া হোচ্ছে, বেশী লোকের হোচ্ছে, বেশী লম্বা হোচ্ছে, তত উল্টো ফল হোচ্ছে। সবচেয়ে হাস্যকর হয় যখন এই অতি মোসলেমরা গৎ বাঁধা দোয়া কোরতে কোরতে ‘ফানসুরনা আলাল কওমেল কাফেরিন’ এ আসেন। অর্থ হোচ্ছে “হে আল্লাহ! কাফেরদের বিরুদ্ধে (সংগ্রামে) আমাদের সাহায্য কর।” আল্লাহর সাথে কি বিদ্রুপ! কাফেরদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের লেশমাত্র নেই, দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম নেই, পৃথিবীর দু’চার যায়গায় কাফের মোশরেকদের সঙ্গে যা কিছু সংগ্রাম চলছে তাতে যোগ দেয়া দূরের কথা, কোন সাহায্য পর্যন্ত দেয়ার চেষ্টা নেই, শুধু তাই নয় গায়রুল্লাহর, খ্রিস্টানদের তৈরী জীবন-ব্যবস্থা জাতীয় জীবনে গ্রহণ কোরে নিজেরা যে শেরক ও কুফরীর মধ্যে আকণ্ঠ ডুবে আছেন এমন কি তার বিরুদ্ধে যেখানে সংগ্রাম নেই সেখানে কুফরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার চেয়ে হাস্যকর আর কী হোতে পারে? এ শুধু হাস্যকর নয়, আলল্লহর সাথে বিদ্রুপও। যারা দোয়া করাকে আর্টে পরিণত কোরে, কর্মহীন, প্রচেষ্টাহীন, আমলহীন, কোরবানীহীন, সংগ্রামহীন দোয়া কোরছেন তারা তাদের অজ্ঞতায় বুঝছেন না যে, তারা তাদের ঐ দোয়ার দ্বারা আল্লাহর ক্রোধ উদ্দীপ্ত কোরছেন, আর তাই দোয়ার ফল হোচ্ছে উল্টো। তাই বলছি ঐ দোয়ার চেয়ে দোয়া না করা নিরাপদ।
বর্তমানের এই হতভাগা মোসলেম জাতির দোয়া কেন কবুল হয় না তারা তারা বুঝতে অক্ষম। প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর দেওয়া সংজ্ঞা মোতাবেক মো’মেন নন। একটা উদাহরণ দেওয়া যায়। কোন ব্যাংকে যদি একাউন্ট খুলতে হয় তাহোলে নির্দিষ্ট কতগুলি ফরম পূরণ কোরতে হয় এবং কর্তৃপক্ষের চাওয়া মোতাবেক কতকগুলি কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এই শর্ত পূরণ না করা হোলে ঐ ব্যক্তির একাউন্ট খোলা হয় না। ফলে ঐ ব্যাংকে তার কোন ধরনের লেন দেন হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। বর্তমান বিশ্বের দোয়ার শিল্পিরা আল্লাহর দেওয়া শর্ত মোতাবেক (মো’মেন শুধুমাত্র তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের উপর ঈমান আনার পর আর সন্দেহ পোষণ করে না এবং জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। সুরা হুজরাত ১৫) মো’মেন না হোয়েই আল্লাহর কাছে অবিরত দোয়া কোরে যাচ্ছেন যে দোয়া কেবল আল্লাহর ক্রোধই উদ্দীপ্ত কোরছে।
পাদটিকা: কোন এক দোয়ার মাহফিলে সন্ধ্যা থেকে ওয়াজ কোরতে কোরতে গভীর রাত হয়ে যায়। প্রধান মেহমান যিনি শুধুমাত্র দোয়া করার জন্য এসেছেন, মাহফিল পরিসমাপ্তিতে তিনি ফর্দ আকারে দোয়া করা শুরু কোরলেন। তিনি চোখ বন্ধ কোরে নিজের জন্য, আত্মীয় পরিজনের জন্য, সমাজের জন্য, দেশ ও জাতির জন্য এমনকি মোসলেম জনগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক দুরবস্থার জন্যও দোয়া কোরতে ভুলেন নি। দোয়া শেষ কোরে যখন চোখ খুললেন তার সামনে দেখলেন মাহফিল স্থলের এক কোণে শুধু একটা লোকই বসে আছে। তিনি বোললেন, ‘আজকের মাহফিলে আল্লাহ একটা লোককেই হেদায়াত কোরেছেন।’ কথাটি লোকটির কানে যেতেই সে বোলে উঠলো যে, ‘হুজুর! আপনার ওয়াজ কি শেষ হোয়েছে? আমি মাইকটার জন্য বসে আছি। আমি মাইকওয়ালা’। আমাদের ধর্মব্যবসায়ী ওয়াজ ও দোয়া শিল্পরা সারা জীবন রঙ রস দিয়ে দোয়া কোরে যাবেন কিন্তু শেষ বিচারের দিন দেখা যাবে তাদের সবই বৃথা, এমনকি তারা নিজেরাও জাহান্নামের আঁস্তকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। তাদের জন্য বড়ই আফসোস!

No comments:

Post a Comment