Monday, November 30, 2015

ফোনে টিপস্ শুনে বোনের ডেলিভারি করাল কিশোরী

ফোনে টিপস্ শুনে বোনের ডেলিভারি করাল কিশোরী





ইনস্ট্রাকশন আসছিল টেলিফোনে। তাই শুনেই ঠাণ্ডা মাথায় নিজে হাতে নিজের ছোট্ট বোনের ডেলিভারি করাল ১১ বছরের মেয়েটি। সযত্নে সদ্যোজাতের নাড়ি কেটে তুলে দিল মায়ের কোলে। জীবনে এমন একটা অভিজ্ঞতা কিশোরীটিকে এমনই অনুপ্রাণিত করেছে যে, বড় হয়ে সে ধাই মা হতে চায়। রোজকার মতো স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল ব্রিটেনের ডর্ডনের বাসিন্দা ১১ বছরের কেটলিন ব্রুক। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সে-ই সবচেয়ে বড়। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের একেবারে অ্যাডভান্সড স্টেজ। বাবা ড্যানিয়েল ভোর পাঁচটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে হঠাত্‍‌ই লেবার পেন শুরু হয় কেটলিনের মা তারা নাইটেলের। তাঁর পরামর্শে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে পাঠায় কেটলিন। কিন্তু, জল ভাঙতে শুরু করেছে দেখে, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে তারা বুঝতে পারে, এতটা সময় পাওয়া যাবে না।
কেটলিনকে সেটা বুঝিয়ে বলার পর এতটুকু বিচলিত হয়নি ছোট্ট কিশোরী। সে অ্যাম্বুলেন্স কর্মীকে ফোন করে জানায়, যা করার এখনই করতে হবে। ডেলিভারি করার পদ্ধতি পরপর জানাতে বলে কেটলিন। ফোনের ইনস্ট্রাকশন অনুযায়ী সে ঠাণ্ডা মাথায় পুরো দস্তুর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ডাক্তার বা ধাই মায়েদের মতো প্রসব করানোর কাজ চালিয়ে যায়। কেটলিনের হাত ধরে জন্ম নেয় তার ছোট্ট বোন এলসা। নিখুঁতভাবে তার নাড়ি কেটে বোনকে মায়ের কোলে তুলে দেয় কেটলিন। রোমহর্ষক সেই মুহূর্তটা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তারা। চোখের জলে তিনি জড়িয়ে ধরেন দুই কন্যাকে। গোটা কর্মকাণ্ডের পর মা ও বোন নিরাপদ আছে দেখে, স্কুলে চলে যায় উচ্ছ্বসিত কেটলিন। সে যে কতবড় একটা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে, তা বুঝতেই পারছিল না ছোট্ট মেয়েটি।
বরং নিস্পাপ কেটলিন তখন বলছে, প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমি জীবনে কখনও এরকম কিছু করিনি। কিন্তু, বোনটাকে যখন জন্মাতে দেখলাম তখন দারুণ লেগেছে। ও খুব সুন্দর। এই অভিজ্ঞতাটাও আমার কাছে দারুণ আনন্দের। আমি বড় হয়ে ধাই মা-ই হতে চাই। কেটলিনের জন্য গর্বিত তাঁর মা তারাও। তিনি বলেছেন, ‘আমি যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলাম, কেউ নেই দেখে ভয়ও পেয়ে গিয়েছিলাম। কেটলিন কিন্তু আগাগোড়া শান্ত ছিল। ওকে যা বলা হচ্ছিল, তাই ও করে যাচ্ছিল। যখন দেখলাম এলসার মাথাটা দেখা যাচ্ছে, তখন আর ভয় পাইনি। কারণ তখন আমার মনে হয়েছিল, আমাকে কেটলিন দেখছে। ভয় পেলে চলবে না। ও সত্যিই খুব সাহসী।

No comments:

Post a Comment