Saturday, December 12, 2015

জাতির বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যই যথেষ্ট

জাতির বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যই যথেষ্ট





‘বাংলাদেশকে নিয়ে যে বহুমুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, তা রুখে দিতে জাতীয় ঐক্যই যথেষ্ট। জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তবে অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক কোনো চক্রান্তই আমাদের জন্য হুমকি হতে পারবে না।’ হেযবুত তওহীদের সদস্য আব্দুল হক বাবুল সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুরে দৈনিক বজ্রশক্তির উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
আব্দুল হক বাবুল বলেন, ‘পুরো বিশ্ব বর্তমানে অত্যন্ত অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদীরা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে বা ধরে রাখতে সচেষ্ট রয়েছে। এই আধিপত্যের জের ধরে তারা একেকটি দেশকে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘গত দুই দশকে আমরা সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসনে মধ্যপ্রাচ্যের একেকটি সমৃদ্ধ দেশকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখেছি। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া তাদের কোপানলে পড়ে বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। সিরিয়াও আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। তারা তাদের সাম্রাজ্যবাদকে কায়েম করতে এভাবে একের পর এক মুসলিম দেশকে টার্গেট করছে। এক্ষেত্রে তাদের কৌশল হচ্ছে, দেশগুলোতে তারা অভ্যন্তরীণ সংকট তৈরি করবে, ঐ দেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে এটা প্রমাণ করবে, তা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনে জঙ্গি গোষ্ঠীর জন্ম দেবে, আর সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দেবার জন্য প্রয়োজনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মদদ দিয়ে যাবে। অতঃপর তারা দেশটিতে আক্রমণ করে সেখানে তাদের তাবেদার কোনো সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে ফায়দা লুটবে। অতীতে আমরা বারবার এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি লক্ষ করেছি এবং বর্তমানেও করছি।’ জনাব বাবুল আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে নিয়েও এমন একটি ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। এই ষড়যন্ত্রের কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ পশ্চিমাদের তাবেদারি করে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ এবং বুদ্ধিজীবী, সুশীল ও নাগরিক সমাজ সবাই আজকে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছেন যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান হচ্ছে।’ আব্দুল হক বাবুল বলেন, ‘তবে যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন, আমরা সব রুখে দিতে পারি যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। নিজেদের মধ্যকার সব বিবাদ-বিভক্তি, অনৈক্য দূর করে যদি আমরা ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে পারি তবেই তা মোকাবেলা করা সম্ভব। আর এ কাজে প্রয়োজন ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব যখন প্রশ্নের মুখে পড়ে তখন কে সরকারি দল, কে বিরোধী দল আর কে জনগণ, কে সামরিক কে বেসামরিক ইত্যাদি সব ভুলে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে তা রক্ষার চেষ্টা করতে হয়। জাতির প্রতিটি সদস্যকে হতে হয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায়।’
তিনি বলেনে, ‘হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী জাতিকে ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি, জঙ্গিবাদ ও সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যের দিকে আহ্বান করেছেন। আমরা হেযবুত তওহীদের সদস্যরা সেই ঐক্যের আহ্বান মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা আমাদের লেখনী, পত্র-পত্রিকা, সভা-সেমিনারে একটাই কথা বলছি, স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের ন্যায় ও সত্যের পক্ষে এবং যাবতীয় অন্যায়, অসত্যের বিপক্ষে মজবুত ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ইতোমধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন। কিন্তু জাতিকে রক্ষায় এটুকু যথেষ্ট নয়। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে পুরো জাতিকে। নিজেদের মধ্যে অনৈক্যের ছিঁটেফোটা রেখেও আমরা আসন্ন সংকট থেকে রক্ষা পাবো না। আমাদের চলমান কার্যক্রমে জনসাধারণ ও সরকরের সহযোগিতা কামনা করছি।’

No comments:

Post a Comment